
বিস্তৃত সবুজ শ্যামল ফসলি মাঠের মাঝেই এক ক্যাম্পাস যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)। ইটপাথরে গড়া ৩৫ এককের ক্যাম্পাসে এরই মধ্যে আগমন ঘটেছে নবীন শিক্ষার্থীদের। ওরিয়েন্টেশনের পর একাডেমিক ক্লাস শুরুর প্রথম দিনেই নবীনদের পদচারণায় প্রাণচঞ্চলতায় নতুন রূপে সেজেছে ক্যাম্পাস সড়ক ও চত্বরগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনসমূহের করিডোর, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, শহীদ মিনার, অদম্য একাত্তর ভাস্কর্য, ঝুপড়ি দোকান, সবুজ ঘাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, কদম-কৃষ্ণচূড়া বৃক্ষের ছায়ায় শিক্ষার্থীদের পদচারণা দেখে মনে হয় এ যেন এক মিলনমেলা। ক্যাম্পাসের প্রতিটি আড্ডাস্থলে পুরাতনদের পাশাপাশি আলো ছড়িয়েছে নবীন মুখগুলোও।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনে তাদের চোখে-মুখে ছিল অন্যরকম আবেগ। শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে গল্প-আড্ডায় মেতে ওঠেন। ভর্তিযুদ্ধে জয়ী হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য এমন একটি দিন সত্যিই অনেক আনন্দের। চান্স পাওয়ার পর প্রত্যেকেই ক্যাম্পাস নিয়ে মনে মনে আঁকতে থাকে নানা স্বপ্ন, নানা পরিকল্পনা। প্রস্তুতি নিতে থাকে ক্যাম্পাসের প্রথম দিন কীভাবে কাটাবেন এবং কী করবেন। তেমনি যবিপ্রবির ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক এটিএম মাহফুজ।
স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী কাউছার ব্যাপারী জানান, যবিপ্রবিতে ভর্তি হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এটি একটি র্যাগিংমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে আমি গত এক সপ্তাহ ধরে আছি। আলহামদুলিল্লাহ, পরিবেশ মোটামুটি ভালো। আমার স্বপ্নের ক্যাম্পাস ছিল চবি কিন্তু ভাগ্য হয়তো যবিপ্রবিতে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ছোট হলেও সবমিলিয়ে ভালো।
জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী মালিহা খন্দকার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনেই বিভাগের শিক্ষক ও বড় ভাইয়া-আপুরা আমাদের বরণ করে নিয়েছেন। সিনিয়র ভাইয়া-আপুদের সঙ্গে কথা হয়েছে, বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ ও চেয়ারম্যান স্যার বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সর্বোপরি নবীন হিসেবে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা চমৎকার ছিল।
আশফাক সিফাত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রথম দিন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ব্যাচের সব বন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হতে পেরে খুবই ভালো লাগলো আমার। ক্যাম্পাসটা অনেক সাজানো গোছানো কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটা ছোট হওয়ায় একটু অন্যরকম লাগছে।
কলা অনুষদের শিক্ষার্থী আবিদ আজিদুর জানান, আমার ইচ্ছে ছিল আমি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো। আলহামদুলিল্লাহ, ইচ্ছাটা পূরণ হয়েছে এবং যবিপ্রবি ছিল আমার পছন্দের তালিকায় তৃতীয়। আগে থেকেই শুনেছি যবিপ্রবি অনেক গোছালো, ভালো লাগছে কারণ ভার্সিটির আশপাশে সবরকম সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি। ঢাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশ পাওয়া যায় না ও জ্যাম তো আছেই। যেহেতু আমি ঢাকা থেকে এসেছি, এজন্য ভার্সিটির পরিবেশটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক ফ্রেশ বাতাস পাচ্ছি যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
নবীন শিক্ষার্থীর সঙ্গে আসা এক অভিভাবক বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেছি, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সবাই খুব ভালো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় বসে খাবার খেলাম, খাবার মোটামুটি ভালো। সবমিলিয়ে আজকের দিনে ছেলের অর্জনে পিতা হিসেবে গর্ববোধ করছি।
আজকালের খবর/ওআর